বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

ব‌্যভিচারের অভিযোগ, উপপত্নীর পর থাই রাজার কোপে ‘প্রাসাদ রক্ষী’

ব‌্যভিচারের অভিযোগ, উপপত্নীর পর থাই রাজার কোপে ‘প্রাসাদ রক্ষী’

সুন্দরী আর সুযোগ‌্যা উপপত্নীকে ‘বনবাসে’ পাঠানোর পর এবার নিজের ‘প্রাসাদ’ থেকেও রক্ষীদের সরালেন থাইল‌্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালংকর্ন।

এক বছর আগেই থাইল‌্যান্ডের সিংহাসনে অভিষেক হয়েছে এই নতুন রাজার। আর এরই মধ্যে তার ব‌্যক্তিগত জীবন ও বহুগামিতার স্বভাব গোটা দেশের আলোচনার বিষয়। সম্প্রতি রাজার রানি আর উপপত্নীকে নিয়ে ফাঁপরে পড়ার গল্পও ডানা মেলেছে দেশজুড়ে। এবার সেই কাহিনিতেই নতুন করে ধোঁয়া দিলো রাজার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত। কারণ, রাজা যাদের রাজ পরিবারের চাকরি থেকে বহিষ্কার করেছেন, তাদের দায়িত্ব ছিল রাজা-রানির রাজকীয় শয‌্যাঘর পাহারা দেয়ার। আর এই রক্ষীদের বিরুদ্ধেই ব‌্যভিচার এবং উত্তেজিত আচরণের অভিযোগ এনেছেন রাজা। চ্যুত করেছেন সমস্ত রাজকীয় পদ এবং সুবিধা থেকে।

এছাড়া সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে আরো দুই রাজ রক্ষীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করা এবং অন‌্য ব‌্যক্তির স্বার্থে রাজার বিরুদ্ধে কাজ করার।

এই নিয়ে গত দু’ সপ্তাহে থাইল‌্যান্ডের রাজপ্রাসাদ থেকে দশজন কর্মীকে বহিষ্কার করা হল। যার মধ্যে অন‌্যতম থাইল‌্যান্ডের রাজার উপপত্নী, রয়‌্যাল কনসর্ট শিনিনত। শিনিনতের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ আনেন রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন। রাজপ্রাসাদের তরফে জানানো হয়, তিনি রানির সমকক্ষ হওয়ার অনৈতিক চেষ্টা করেছিলেন এবং রাজা তাকে যে মর্যাদা দিয়েছিলেন তার অসম্মান করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করেছেন।

অবাক হওয়ার বিষয় হলো, এই ঘোষণার দিন থেকেই শিনিনতের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। থাইল‌্যান্ডবাসীর অনুমান রাজার রয়‌্যাল কনসর্ট ওরফে উপপত্নী শিনিনত উওংবাজিরাপাকরিকে রাজা বনবাসে পাঠিয়েছেন। ঠিক যেমনটা তিনি করেছেন তার সাবেক স্ত্রীদের সঙ্গে। আর এই বনবাসেই একা, লোকালয়ের সমস্ত রকম সুবিধা ছাড়া থাকতে থাকতে হয়তো একদিন অসুস্থ হয়ে মারা যাবে সে।

রাজার এই উপপত্নী শিনিনতের বয়স ৩৫। ডাক নাম কোই। এই কোই থাইল‌্যান্ডের রয়‌্যাল আর্মির মেজর জেনারেল। পেশায় পাইলট ও থাইল‌্যান্ডের সেনাবাহিনীর সেবিকা হিসেবেও দীর্ঘদিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। গত জুলাই মাসে রাজার উপপত্নীর পদমর্যাদা পাওয়ার আগে রাজার ব‌্যক্তিগত দেহরক্ষীদের প্রধান ছিলেন কোই।
কিন্তু, তিন মাসের মধ্যেই তাকে নিয়ে মোহভঙ্গ হয় রাজার। আর তারপরেই দ্রুত পতন হয় কোইয়ের। তার বিরুদ্ধে রানি সুথিডার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এবং রাজা রানির সম্পর্কের মধ্যে আসার অভিযোগ এনে সমস্ত রাজ মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়। এরপর কোইকে সাহায‌্যকারী রাজপরিবারের পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীকেও বহিষ্কার করা হয় পদ থেকে। পুরো বিষয়টি রাজপ্রাসাদের তরফে প্রকাশ্যেই করা হয়। আর এই ঘটনাটিকে রাজপ্রাসাদের ‘শুদ্ধিকরণ’ বলে মন্তব‌্য করে থাইল‌্যান্ডের সংবাদমাধ‌্যম।

আসলে এক ধরনের বিষম রাজকীয় মানহানি আইন চালু আছে। যার সুবাদে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের রাজার অন্তঃপুরের কথা জানা তো দূর জল্পনা-কল্পনা করার রসদটুকুও পান না। এমনই কঠিন সেই আইন যে, যদি কোনো পত্র-পত্রিকা রাজ অন্দরমহলের মানহানি হয় এমন খবর ছাপে, বা তাদের প্রকাশিত খবর অসত‌্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে, রাজরোষে আর ওই মানহানি আইনের জোরে তল্পিতল্পা গুটাতে হবে তাদের। কিন্তু, সেই তাই রাজপরিবারেই এই ‘শুদ্ধিকরণ’-এর জেরে রাজ অন্তঃপুরের কোন্দল আড়াল করা যাচ্ছে না আর। রাজপ্রাসাদের তরফে যদিও দুই শয়নঘর রক্ষীর ব‌্যভিচার প্রসঙ্গে খোলসা করে বলা হয়নি কিছু।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877